Recent Posts

রম্যগল্পঃ টিউশনিতে টুনটুনি


funny story tution

এক বন্ধু দেখি পাগলের মত হাসছে। পুরো ভয়ানক অবস্থা। জিজ্ঞেস করলাম, ঘটনা কী? বন্ধু বললো:

আমি নিরীহ মানুষ। এক মেয়েকে প্রাইভেট পড়াই। মেয়ের চেহারা-ছবি মাশাল্লাহ। কিন্তু আমি পড়ানোর মানুষ, পড়িয়ে চলে আসি। কতিপয় দুষ্টুবন্ধুর চক্রান্তে কিছু প্রামাণ্যচিত্রের ভিত্তিতে নারীদেহ সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান থাকলেও নারীর মন নিয়ে একেবারেই আনাড়ি। সুতরাং পড়ানোর বাইরে কোন কথাই বলি না। ইন্টিগ্রেশনের জটিল থেকে জটিলতর সমস্যায় হাবুডুবু খাই বিধায় ছাত্রীর দিকে তাকানোরও সময় পাই না।


প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম হলো সুন্দরী মেয়েদের একটা করে খচ্চর ছোট ভাই থাকবে। এই ছাত্রীরও একটা ভাই আছে, মাঝে মাঝে আমাকে টাইট দিয়ে ছেড়ে দেয়! একদিন খুব কঠিন কিছু পড়াচ্ছি। পাতার পর পাতা লিখে যাচ্ছি। আন্টি আসলেন নাশতা নিয়ে। তাঁর পিছনে পিছনে আসলো মূল ঝামেলা। 


সেই খচ্চর পিচ্চির হাতে একটা হলুদ প্যাস্টেল রং। দুই পাটির চব্বিশটা দাঁত বের করে হাসতে হাসতে বললো, "ভাইয়া বলো তো, এটা কিসের মতো দেখতে!"

আমি বললাম, "কীসের মতো?"

বিজ্ঞের হাসি দিয়ে পিচ্চি বললো, "আমার টুনটুনির মতো।" 


পাক্কা এক মিনিট হাসিতামাশা করলাম। বললাম, "তোমার টুনটুনি আছে? আমার তো তোমার চেয়েও বড় টুনটুনি আছে! তোমার আপুরও আছে নাকি? টুনটুনির বাসা কি তোমার আম্মুর কাছে থাকে? বাহ, তোমরা তো সবাই পাখিপ্রেমিক!" 

হঠাৎ করে দেখি বাকি সবাই চুপ। বিষয় কিছুই বুঝতে পারলাম না! এসময় আমার বাত্তি জ্বলে উঠলো। যেই টুনটুনি হলুদ প্যাস্টেল রঙের মতো, সেই টুনটুনি আকাশে ওড়ে না। এটা অন্য জাতের টুনটুনি।


আমি তবদা খেয়ে গেলাম। মুখে কোন কথা নাই। ছাত্রী এবং ছাত্রীর মা নীরব।

এই পরিস্থিতিতে কী করা যায়! টেবিলের ওপর দেখি একটা ছোট্ট ফেবার ক্যাস্টেলের কালো রং পেন্সিল। সেটা পিচ্চির আরেক হাতে ধরিয়ে দিয়ে মাথা নিচু করে পড়ানো শুরু করলাম। 

সেদিন আর ছাত্রীর দিকে তাকাই নাই। কে জানে, সন্ধ্যার আলো-আঁধারিতে সেই অপার রহস্যময়ী চোখের দিকে তাকালে কী দেখতাম!


এই বন্ধু কে হতে পারে সে বিষয়ে খুব চিন্তায় আছি। মনে হচ্ছে হামজা ভাইকে এই চরিত্রে ভাল মানাবে।


React

Share with your friends!

Comments