অনেকদিন পরের কথা। ততোদিনে আমাদের ১৯ ব্যাচের কচিকাঁচাদেরও শাদী মোবারক সম্পন্ন হয়ে গেছে। ঘটনা এক বন্ধুর, ধরে নিই তার নাম আসিব।
এতদিন নিত্যকার বাজারে চরম ব্যর্থতার সুনিপুণ পরিচয় দিয়ে গরুর হাটে আসিবকে একা পাঠানো সমীচীন মনে করলো তার গুণধর স্ত্রী (বন্ধুপত্নীর নাম ধরাধরির দিকে গেলাম না!)। ২০২০ সালে গরুর হাটে নারীদের দেখা কদাচিৎ মিললেও যে সময়কার কথা বলছি, তখন বেশ স্বাভাবিক। আমরা যেমন পয়লা বৈশাখে সুন্দরী ললনা দেখার জন্য রাস্তায় ভিড় করতাম, আমাদের সন্তানাদি এখন গরুর হাটের সামনে ভিড় করে বলে শুনেছি!
সুতরাং আসিব সস্ত্রীক এবং অতি অবশ্যই “স্বস্ত্রীক” রওনা হলো। একালে রমণীরাও গরুর পশ্চাদ্দেশে চপেটাঘাত করার শিল্প ভালোই রপ্ত করে ফেলেছে! সুতরাং আসিবের স্ত্রী তার কোমল হাত দিয়ে আলতো করে গরুর পাছায় চাপড় দিলো। এমন মধুর স্পর্শে গরু মহাশয় চোখ বুজলেন।
আসিব যারপরনাই ঈর্ষান্বিত এবং অপমানিত হয়ে আরেক পাছায় ঝপাং করে এক থাপ্পড় বসিয়ে দিল। (গরুর আরেক পাছায় আরকি!) চরম বিরক্ত হয়ে গরু এবার বন্ধুর দুপায়ের মাঝ বরাবর লাত্থি দিয়ে আসিবকে ভূপাতিত করে ফেললো!
গরু আনা হলো আসিবের বাড়িতে। কিন্তু আসিবের বউ গরুর পাছায় প্রথমবারের মত চাপড় দিয়ে বেশ মজা পেয়ে গেছে! সুতরাং গরুর কাছ থেকে আর নড়ে না। এদিকে আসিব অভ্যাসমত সুযোগ পেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
ঘুম ভাঙলো বউয়ের চিৎকারে। বের হয়ে আসিব দেখে আরামে গরুর চক্ষু নিমীলিত। পত্নীর হাত ভর্তি কাঁচা গোবর।
আসিব বিজ্ঞের হাসি হাসলো। “তোমার এই লাড়ালাড়ির স্বভাবটা আর গেল না!” বলে দেখাতে গেল কীভাবে আসলে এই কাজ করতে হয়। ফলাফল আবার দুপায়ের মাঝ বরাবর লাত্থি।
এমন সময় আমি গেলাম বন্ধুর বাড়িতে। গিয়ে দেখি বন্ধু দুইহাত চেপে ধরে আছে পায়ের ফাঁকে, বন্ধুর বউ হাত ভর্তি গোবর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। দুইজন দুইজনের দিকে তাকিয়ে পাগলের মত হাসছে!
আহা কী মধুর হাসি! কী রোমান্টিক দৃশ্য! কেন বিবাহ করি নাই, সে বিষয়ে একবার আফসোস হল। পরক্ষণে দুইজনের মাঝ দিয়ে গরুর পাছায় হাড্ডিওয়ালা হাতে আরেকটা বাড়ি দিয়ে বললাম, “ভাই জিতছিস!”
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা!
Comments
Post a Comment