Recent Posts

ইরাটোস্থেনিসঃ পৃথিবীর পরিধি মেপেছিলেন আলেক্সান্দ্রিয়ার যে গ্রন্থাগারিক


১৬৩৫ সালে বার্নার্ডো স্ট্রোজ্জির একটি শিল্পকর্ম

গ্রীক মহাবীর আলেক্সান্ডারের মৃত্যু হলে তার সুবিশাল সাম্রাজ্যের দায়িত্ব অর্পিত হয় তিন সেনাপতির কাঁধে। মিশরের দায়িত্ব পড়ে টলেমির ওপর। গুণীজনমাত্রই জ্ঞানের কদর করেন। টলেমি সেখানে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন সেসময়কার বিপুল জ্ঞানের ভাণ্ডার, আলেক্সান্দ্রিয়ার বিখ্যাত গ্রন্থাগার। দেশ-বিদেশ থেকে বড় বড় পণ্ডিতদের নিয়ে আসেন সেখানে।

সাইরিন (Cyrene) মিশরেরই এক জনপদ। সেখানে ২৭৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্ম নেন ইরাটোস্থেনিস (Eratosthenes of Cyrene)। তিনি ছিলেন জ্ঞানের অনুরাগী। দূর-দূরান্তে ছুটে বেড়ান জ্ঞানের সন্ধানে। এদিকে টলেমির সেই বিপুল গ্রন্থাগার দেখাশোনার জন্য লোক দরকার। তিনি খোঁজ পান ইরাটোস্থেনিসের। ইরাটোস্থেনিসের বয়স তখন ত্রিশ বছর। টলেমি তাকে ডেকে পাঠান বিখ্যাত আলেক্সান্দ্রিয়ার লাইব্রেরির দেখাশোনার জন্য। জ্ঞানচর্চার এই সুযোগ হাতছাড়া করেননি ইরাটোস্থেনিস।

প্রাচীন জনপদ আলেক্সান্দ্রিয়া

পরবর্তীতে তিনি হন আলেক্সান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারের প্রধান গ্রন্থাগারিক। তিনি একাধারে ছিলেন গণিতবিদ, ভূগোলবিদ, কবি, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও সঙ্গীত তত্ত্ববিদ। তবে সবথেকে বেশি যে দুটি কারণে তিনি বিখ্যাত, তা হলো প্রথমবারের মতো প্রায় নির্ভুলভাবে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় আর মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের অভিনব পদ্ধতি আবিষ্কার।

এই লেখায় ইরাটোস্থেনিসের সেসব মহান কাজের কথাই সংক্ষেপে তুলে ধরা হবে। মোটাদাগে এই লেখার বিষয়বস্তু মোটামুটি তিনভাগে বিভক্ত:

১. মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ে 'সীভ অব ইরাটোস্থেনিস';
২. ইরাটোস্থেনিসের পৃথিবীর পরিধি নির্ণয়ের পদ্ধতি; এবং
৩. ভূগোল ও জ্যোতির্বিদ্যায় ইরাটোস্থেনিস।

কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় যাওয়া যাক।

আলেক্সান্দ্রিয়া গ্রন্থাগারের প্রধান গ্রন্থাগারিক ইরাটোস্থেনিস

মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ে 'ইরাটোস্থেনিসের ছাঁকনি' পদ্ধতি

ইংরেজিতে এই পদ্ধতিকে বলা হয় 'Sieve of Eratosthenes', বাংলায় ইরাটোস্থেনিসের ছাঁকনি। এই ছাঁকনির কাজ কী? এই ছাঁকনি অনেকগুলো সংখ্যা থেকে মৌলিক সংখ্যাগুলো বেছে আলাদা করে।

মৌলিক সংখ্যা হলো সেসকল সংখ্যা, যাদের ১ এবং ঐ সংখ্যা ছাড়া আর কোনো সংখ্যা দিয়েই ভাগ করা যায় না। কোনো সংখ্যা মৌলিক কি না জানা খুব সহজ, সবগুলো উৎপাদক বের করে দেখবো মৌলিক কি না। আচ্ছা, সংখ্যাটা যদি অনেক বড় হয়, যেমন, ১৯৩৩ মৌলিক কি না বের করার জন্য তো ১৯৩২টি সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে দেখতে হবে! এরও সহজ বুদ্ধি আছে, কোনো সংখ্যা মৌলিক কি না, সেটা জানতে সবগুলো সংখ্যা দিয়ে ভাগ করার দরকার নেই, কেবল ঐ সংখ্যার বর্গমূল পর্যন্ত দেখলেই হবে। কেন?

মনে করুন, N একটা সংখ্যা এবং N = a×b। এখন আমাদের প্রমাণ করতে হবে a, b এর মধ্যে একটা অবশ্যই N এর বর্গমূলের চেয়ে ছোট, আরেকটা N এর বর্গমূলের চেয়ে বড়। শুরুতে ধরে নিই, দুটিই N এর বর্গমূলের চেয়ে বড়। তাহলে কিন্তু a, b গুণ করলে N এর চেয়ে বড় হয়ে যাবে। এজন্য কোনো সংখ্যা যদি মৌলিক না হয়, অবশ্যই তার একটা না একটা উৎপাদক থাকবে, যা N এর বর্গমূলের চেয়ে ছোট। এখান থেকে সহজেই বোঝা যায়, আরেকটি উৎপাদক হবে N এর বর্গমূলের চেয়ে বড়।

আমরা মৌলিক সংখ্যা বের করার একটা পদ্ধতি পেলাম এবং এটা মোটামুটি ভাল একটা পদ্ধতি। কিন্তু আমাদের যদি অনেকগুলো সংখ্যা থেকে মৌলিক আর অমৌলিক সংখ্যাগুলো আলাদা করতে বলা হয়, তখন কিন্তু প্রতিটা সংখ্যার জন্য আলাদা আলাদা করে উৎপাদক বের করে দেখাটা মোটেও ভাল কোনো পদ্ধতি না। এজন্যই দরকার পড়ে ইরাটোস্থেনিসের ছাঁকনি। এই পদ্ধতি এখনও বড় বড় রেঞ্জের মধ্যে মৌলিক সংখ্যা বের করতে এক কার্যকর অ্যালগরিদম, কম্পিউটার জগতে এর রয়েছে বিপুল ব্যবহার।

আলেক্সান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগারে ইরাটোস্থেনিস

খুব সাধারণভাবে চিন্তা করা যাক। যে সংখ্যা কোনো একটা মৌলিক সংখ্যার গুণিতক, নিঃসন্দেহে সেটি আর মৌলিক নয়। এই বিষয়টি কাজে লাগানো যাক। মনে করি, ১-২০ এর মধ্যে সব মৌলিক সংখ্যা বের করতে চাই। শুরুতে আমাদের তালিকায় সব সংখ্যাই থাকবে, আস্তে আস্তে অমৌলিক সংখ্যাগুলো ছাঁকনি বেয়ে পড়ে যাবে, রয়ে যাবে মৌলিক সংখ্যাগুলো। এটা কীভাবে হবে?

আমরা শুরু করবো ২ থেকে। তালিকা থেকে ২ এর সব গুণিতক বাদ দিয়ে দিই (৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ১৪, ১৬, ১৮, ২০)। এরপর আসা যাক, ৩ এর উৎপাদকে। তিনের প্রথম উৎপাদক হলো ৬, কিন্তু এটি আগেই বাদ পরে গেছে, ২ এর গুণিতক হওয়ায়। তাহলে আমরা শুরু করলাম ৩ এর বর্গ ৯ থেকে (৯, ১৫)। এবার পরের সংখ্যা হওয়া উচিত ৪, কিন্তু এটি আগেই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। পরের সংখ্যা ৫, কিন্তু এর সকল গুণিতকই বাদ পড়ে গেছে। তাহলে আমাদের হাতে রইলো কী? ২, ৩, ৫, ৭, ১১, ১৩, ১৭, ১৯; মানে ১-২০ এর মধ্যে সকল মৌলিক সংখ্যা।

কীভাবে বুঝলাম ৫ আসলেই আমাদের থেমে যেতে হবে? আসলে আমাদের থামার কথা ৪ এ। কারণ ২০ এর বর্গমূল করলে ৪.৪৭। তার মানে ২০ এর মধ্যে এমন কোন সংখ্যা নেই যাদের এমন এক জোড়া উৎপাদক আছে, যার দুটিই ৪ এর চেয়ে বড়।

বুঝতে একটু অসুবিধা হলে নিচের অ্যানিমেশনটি দেখা যাক। এটি ১-১০০ পর্যন্ত সব মৌলিক সংখ্যা বের করে। শুরুতে ২ এর সব গুণিতক বাদ দিয়ে দেব, তারপর ৩… এরকম চলতে থাকবে। সবশেষে যেগুলো পড়ে থাকবে, সেগুলোই মৌলিক সংখ্যা।


ইরাটোস্থেনিসের ছাঁকনি থেকে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। সেটা হলো- ১ কোনো মৌলিক সংখ্যা নয়, কারণ ১-কে মৌলিক হিসেবে ধরলে ১ এর সব গুণিতক বাদ পড়ে যাবে, মানে পৃথিবীতে আর কোনো মৌলিক সংখ্যাই থাকবে না! এখানে আরেকট বিষয় উল্লেখ্য, ১ কিন্তু কম্পোজিট সংখ্যাও না। একে বলা হয় একক সংখ্যা।

ইরাটোস্থেনিসের সীভের ধারণা ব্যবহার করে আরও অনেক মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়ের উচ্চতর অ্যালগরিদম এসেছে। একদম বেসিক সীভ ইমপ্লেমেন্টেশন করে ১০ মিলিয়ন পর্যন্ত সব মৌলিক সংখ্যা বের করার সি প্লাস প্লাস কোড এখানে দেওয়া হলো, সাধারণ মানের কম্পিউটারে এই কাজটি করতে মোটামুটি ১ সেকেন্ডেরও কম সময় লাগে!

ইরাটোস্থেনিসের পৃথিবীর পরিধি নির্ণয়ের পদ্ধতি

২,২০০ বছর আগে ইরাটোস্থেনিস প্রায় নির্ভুলভাবেই পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেন। তবে দুঃখের বিষয়, তার প্রকৃত কাজগুলো কালের গর্ভে হারিয়ে যায়। ইরাটস্থেনিসের পদ্ধতি হিসেবে আমরা যা জানি তা হলো ক্লিওমেডের পদ্ধতি। তিনিও আরেকজন গ্রীক দার্শনিক। তিনি উল্লেখ করেন, ইরাটোস্থেনিসের লিখিত বই “On the Measure of the Earth”-এ প্রথমবারের মতো পৃথিবীর পরিধি নির্ণয়ের পদ্ধতি পাওয়া যায়। একে সরলীকৃত করে পরবর্তীতে ক্লিওমেড তাঁর গ্রন্থে উল্লেখ করেন।

ইরাটোস্থেনিস প্রথম ব্যক্তি যিনি পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেছিলেন

২১ জুন পৃথিবীতে দিন সবচেয়ে বড় হয়। এই দিনের আরেকটা বৈশিষ্ট্য হলো, বিষুবরেখার ওপর ঠিক মধ্য-দুপুরে কোনো বস্তুর ছায়া দেখা যায় না। সহজ কথায়, এদিনে সূর্য থাকে ঠিক মাথার ওপর। কিন্তু বিষুব রেখার বাইরে সামান্য হলেও ছায়া রয়ে যায়। আরেকটা জিনিস আমাদের জানতে হবে, সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বের তুলনায় পৃথিবীর দুই জনপদের দূরত্ব নিতান্ত সামান্য। তাই কাছাকাছি দুটি জনপদে সূর্যরশ্মি মোটামুটি সমান্তরালভাবে পতিত হয়। নিচের ছবিটা লক্ষ্য করলে হয়তো আরও একটু ভালভাবে বোঝা যাবে।

মিশরের এক জনপদ সাইন (Syne, বর্তমান নাম আসোয়ান, Assuan) মোটামুটি বিষুব রেখার ওপর অবস্থিত। এ অঞ্চলে ২১ জুন মাটিতে খাড়া করে পুঁতে রাখা কোনো কাঠির ছায়া পড়ে না। কিন্তু আলেক্সান্দ্রিয়াতে বসে ইরাটোস্থেনিস দেখলেন এখানে ছায়া দেখা যাচ্ছে। আচ্ছা, নিচের ছবিটার দিকে তাকানো যাক। সেখানে সামান্য জ্যামিতি করেই আমরা পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করে ফেলবো!


ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সূর্যরশ্মি AB আর CD সমান্তরাল। ফলে এদের একান্তর কোণদুটি ∠DCA আর পৃথিবীর কেন্দ্রে ∠CAB সমান। এভাবে কাঠি আর ছায়ার দৈর্ঘ্য দেখে কোণ হিসাব করে ফেললেন ইরাটোস্থেনিস। দেখা গেল এই কোণ বৃত্তের কোণের পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ (৩৬০° কোণের পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগ)। তখনকার সময়ে আলেক্সান্দ্রিয়াতে দূরত্ব মাপা হতো স্টেডিয়া এককে। সাইন আর আলেক্সান্দ্রিয়ার দূরত্ব ছিল প্রায় ৫,০০০ স্টেডিয়া। এখন খুব সহজভাবে চিন্তা করা যাক।

বৃত্তের পঞ্চাশ ভাগের এক ভাগের জন্য দূরত্ব হয় ৫,০০০ স্টেডিয়া। তাহলে পুরো বৃত্তের জন্য দূরত্ব (যার নাম পরিধি) হবে এর ৫০ গুণ, মানে ২৫,০০০ স্টেডিয়া, কিলোমিটারের হিসাবে যা প্রায় ৩৯,৬৯০ কিলোমিটার। আজ আমরা জানি পৃথিবীর পরিধি (এটি বৃত্তের পরিধি, গোলকের ক্ষেত্রফল না) প্রায় ৪০,২০০ কিলোমিটারের মতো। অর্থাৎ এত বছর আগেও ইরাটোস্থেনিসের হিসাবে ভুলের পরিমাণ ছিল ২ শতাংশেরও কম!


এখানে আরেকটা বিষয় উল্লেখ করা যায়। ক্লিওমেডের বইতে পাওয়া যায়, পৃথিবীর পরিধি ২৫,০০০ স্টেডিয়া। আরেকদল ইতিহাসবেত্তার দাবি, ইরাটোস্থেনিসের মূল পরীক্ষায় এই মান ছিল ২৫,২০০ স্টেডিয়া। অনেকের ধারণা, গ্রীক দার্শনিকদের মধ্যে সংখ্যা বিষয়ক কিছু বাড়াবাড়ি আবেগ দেখা যায়। ২৫,২০০ সংখ্যাটি ১ থেকে ১০ এর ভেতর সবগুলো স্বাভাবিক সংখ্যা দিয়ে নিঃশেষে বিভাজ্য বলেই ইচ্ছাকৃতভাবে ইরাটোস্থেনিস কাছাকছি এই সংখ্যাটি বেছে নিয়েছিলেন বলে অনেকে মনে করেন। তবে এর পক্ষে-বিপক্ষে সেরকম শক্তিশালী দলিল পাওয়া যায় না।


ভূগোল, জ্যোতির্বিদ্যা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ইরাটোস্থেনিস

বিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা প্রায় সবাই লীপ ইয়ার বা অধিবর্ষ সম্পর্কে জানি। কিন্তু প্রাচীন আমলে এ সম্পর্কে ধারণা দেয়া মোটেও সহজ কোনো ব্যাপার ছিল না। ইরাটোস্থেনিস প্রথম ব্যক্তি যিনি ধারণা করেন, বছর গণনায় আমাদের হিসাব একদম নিখুঁত নয়। তিনি অধিবর্ষের ধারণাও দিয়েছিলেন। পৃথিবী একদম সোজা হয়ে সূর্যের চারদিকে ঘুরপাক খায় না, সামান্য হেলে থাকে। এই হেলে থাকার কোণও ইরাটোস্থেনিস নির্ণয় করেন।

বিশ্বের মানচিত্র অঙ্কনেও, বিশেষ করে মেরিডিয়ান অঞ্চলের মানচিত্রে ইরাটোস্থেনিস গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তিনি সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব এবং সূর্যের ব্যাস নির্ণয়েরও চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেখানে ভুলের মাত্রা অনেকখানি ছিল।

প্রাচীন মিশরে জ্যামিতি নিয়েও প্রচুর কাজ হয়েছিল। সেসময়কার একটা বিখ্যাত সমস্যা ছিল “ডেলিয়ান সমস্যা”। সহজ কথায়, একটি ঘনকের বাহুর দৈর্ঘ্য জানা থাকলে শুধুমাত্র রুলার আর কম্পাস ব্যবহার করে এর দ্বিগুণ আয়তনের ঘনকের বাহু আঁকা যাবে কীভাবে। ইরাটোস্থেনিস প্রমাণ করেন এটি সমাধান করা সম্ভব না।

কেবলমাত্র ভূগোল আর জ্যোতির্বিদ্যা বিষয়ক তাঁর তিনটি বই ছিল বলে ইতিহাসবেত্তাদের ধারণা। এছাড়াও অন্যান্য বিষয়ের ওপরও তিনি বেশ কিছু বই রচনা করেন। কিন্তু তাঁর কোনো বই পুরোপুরি পাওয়া যায়নি। জুলিয়াস সিজার আলেক্সান্দ্রিয়া দখলের পর এই গ্রন্থাগারে আগুন লাগিয়ে দেন এবং বেশিরভাগ বই ও মূল্যবান দলিলপত্র পুড়ে যায়।

প্রাচীন মিশরের মানচিত্র

ইরাটোস্থেনিস আরেক সমসাময়িক পণ্ডিত আর্কিমিডিসের বন্ধু ছিলেন। তিনি তাঁর সমগ্র জীবন আত্মনিয়োগ করেছিলেন জ্ঞানসাধনায়। বৃদ্ধ বয়সে তিনি 'Opthalmia' নামক চোখের রোগে আক্রান্ত হন। ১৯৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে তিনি প্রায় অন্ধ হয়ে যান। তিনি বুঝতে পারেন, এভাবে বেঁচে থেকে আর কারও কাজে আসতে পারবেন না। তার পরের বছর ৮২ বছর বয়সে তিনি স্বেচ্ছায় অনাহারে (Voluntary starvation) মৃত্যুকে বরণ করে নেন।

পরবর্তীতে চাঁদের একটি খাদ তাঁর নামানুসারে নামকরণ করা হয়। এই মহান জ্ঞানসাধক হাজার বছর ধরে বিজ্ঞানপ্রেমীদের মনে রয়ে যাবেন অবিনশ্বর, নীরবে দিয়ে যাবেন অনুপ্রেরণা।

তথ্যসূত্রঃ

1. Lasky, Kathryn; The Librarian Who Measured the Earth. New York and Boston: Little, Brown, 1994.

2. গণিতের রঙ্গে হাসিখুশি গণিত – চমক হাসান

3. Eratosthenes Greek scientist

4. Eratosthenes of Cyrene

5. Biography of Eratosthenes, Greek Mathematician and Geographer











Comments