Recent Posts

টেইলর সিরিজ (প্রথম পর্ব)

ব্রুক টেইলর (১৬৮৫ - ১৭৩১)

একটা পেন্ডুলামের কথা চিন্তা করা যাক। নিচের ছবিতে এই পেন্ডুলামের বব যখন A অবস্থান থেকে B অবস্থানে গেল, তখন এটা অবশ্যই কিছুটা উপরে উঠলো। ঠিক কতটা উপরে উঠলো, সেটা ছবি দেখেই বোঝা যাচ্ছে, $h = R(1 - cos \theta)$, এখানে R হলো সুতার দৈর্ঘ্য।

এখন আমরা জানি, সরল দোলকের ক্ষেত্রে সাধারণত $\theta$ এর মান অনেক কম হয়ে থাকে। অর্থাৎ বলা যায়, $lim_{\theta \to 0}$। এই বিষয়টা মাথায় রেখে আমরা নিচের হিসেবটা করে ফেলি।

$ cos \theta = 1 - 2 sin^2 \frac{\theta}{2}...........(1)$
আবার, $lim_{\theta \to 0} (\frac{sin \theta}{\theta}) = 1$
$\implies lim_{\theta \to 0} sin \theta = lim_{\theta \to 0} \theta$
$\implies lim_{\theta \to 0} sin \frac{\theta}{2} = lim_{\theta \to 0} \frac{\theta}{2}$
দুই পাশে স্কয়ার করে পাই, $lim_{\theta \to 0} sin^2 \frac{\theta}{2} = lim_{\theta \to 0} \frac{\theta^2}{4}..............(2)$
এবার এই মানটা (1) এ বসিয়ে দিই।
$ cos \theta = 1 - 2  \frac{\theta^2}{4} = 1 - \frac{\theta^2}{2}............(3)$
এবার $h$ এর সমীকরণে $cos \theta$ র মানটা বসিয়ে দিই। 
$h = R(1 - 1 + \frac{\theta^2}{2}) = R \frac{\theta^2}{2}$

এই যে কোন কথাবার্তা ছাড়াই এত হিসাব করে গেলাম, এখানে আসলে কী হলো? শুরুতে আমাদের সমীকরণে ছিল $cos \theta$, একটা ত্রিকোণোমিতিক ফাংশন। পরে আমরা একটু হিসাব করে সেটাকে বানিয়ে ফেললাম একটা বীজগাণিতিক ফাংশন। কিন্তু এই বীজগাণিতিক ফাংশন আবার সব জায়গায় সমান হবে না। আমরা একটা লিমিট ব্যবহার করেছি, যেটা বলছে $\theta$ এর মান $0$ এর কাছাকাছি হলেই এই সমীকরণটা ঠিক হবে। 

নিচের ছবিটায় লাল দাগের গ্রাফটা $cos \theta$, আর সবুজ দাগের গ্রাফ $1 - \frac{\theta ^2}{2}$, মানে আমরা যেটা $3$ নম্বর সমীকরণে হিসাব করে বের করেছি। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এই গ্রাফ দুটো শূন্যের কাছাকাছি মানগুলোর জন্য খুব কাছাকাছি।


তার মানে একটা ছোট রেঞ্জের জন্য আমরা একটা ত্রিকোণোমিতিক ফাংশনকে বীজগাণিতিক ফাংশন বানিয়ে ফেলেছি। এখন এই রেঞ্জটা কিভাবে বাড়ানো যায়? কেনই বা বীজগাণিতিক ফাংশনে রূপান্তর করবো, আর রেঞ্জের বাইরে ভুলই বা কীরকম হবে?

Taylor Series কী

একটা বহুপদী নয় এমন ফাংশনকে বহুপদী ফাংশনে রূপান্তর করার জন্যই মূলত টেইলর সিরিজ ব্যবহৃত হয়। বহুপদী নয় এমন ফাংশন হতে পারে এক্সপোনেনশিয়াল ফাংশন ($e^x$), ত্রিকোণোমিতিক ফাংশন ($sinx$), বিপরীত ফাংশন ($sin^{-1}x$), লগারিদমিক ফাংশন ($log_e x$) - এগুলো। 

তাহলে এই ফাংশনগুলোকে বীজগাণিতিক ফাংশন বা বহুপদীতে রূপান্তরের দরকার পড়লো কেন? 

ক্যালকুলেটরে $sin \frac{\pi}{4}$ লিখলে চট করে একটা মান চলে আসে। একটা বিদঘুটে মান, যেমন $sin(15.298^0)$ লিখলেও কিন্তু ঠিকঠাক মান চলে আসে। এই মানটা কিভাবে হিসাব করা হয়? এমন মনে হতে পারে, $15.298^0$ একটা কোণ এঁকে সেটার দুই বাহু মেপে ভাগ করে মান হিসাব করা হয়। কিন্তু এভাবে করলে একেকজনের মান আসতো একেকরকম। কারণ এখানে পরিমাপের ভুল আসবে। কোণের মান, বাহুর দৈর্ঘ্য এভাবে আঁকলে সূক্ষ্ম কিছু ভুল হতে পারে। 

আবার বিজ্ঞানীরা $\pi$ এর মান মিলিয়ন মিলিয়ন ঘর পর্যন্ত বের করে ফেলেছেন। এখানেও কিন্তু বৃত্তের পরিধি হিসেব করে তারপর ব্যাস দিয়ে ভাগ করলে এসব সূক্ষ্ম হিসাবে প্রচুর ভুল হতে পারে। তাহলে এই মানগুলো হিসাব করার জন্য আমাদের দরকার পড়ে একটা বীজগাণিতিক ফাংশনের। 

তাছাড়া বহুপদী হিসাব করা সহজ, ডিফারেনশিয়েট করা যায়, ইন্টিগ্রেট করাও অন্যান্য ফাংশনের চেয়ে মোটামুটি সহজ। এজন্য একটা ফাংশনকে বহুপদীতে রূপান্তর করার জন্য টেইলর সিরিজের দরকার পড়ে। 

$cosx$ এর বহুপদী

একেবারে শুরুতে আমরা $cosx$ এর মান $0$ এর কাছাকাছি বের করেছিলাম, $cosx = 1 - \frac{x^2}{2}$। কিন্তু এটা ছিল ত্রিকোণোমিতির সাহায্যে, আর এভাবে খুব বেশিদূর এই মানগুলো সমানও হয় না। তাই রেঞ্জ বাড়ানোর জন্য আমরা অন্যভাবে এই কাজটা করার চেষ্টা করবো। 

আমরা আসলে $cosx$ এর মতই মান দেবে, এরকম একটা বহুপদী বানাবো। এই কাজটা শুরু করার জন্য আমরা একটা বিন্দু থেকে কাজটা শুরু করবো। হিসাবের সুবিধার জন্য কাজটা আমরা শুরু করছি $0$ বিন্দুর সাপেক্ষে। 

মনে করি, যে ফাংশনটা দেয়া আছে, সেটা $f(x) = cosx$, আর আমরা যে বহুপদী অ্যাপ্রোক্সিমেট করার চেষ্টা  করছি, সেটা $P(x)$। আপাতত ধরে নিই, $P(x)$ যেহেতু একটা বহুপদী, সেটা হতে পারে এরকম, $P(x) = C_0 + C_1 x + C_2 x^2$, যেখানে $C_0, C_1, C_2$ হল সহগ, যেটা আমরা বের করার চেষ্টা করবো। 

$x = 0$ বিন্দুতে $f(x) = f(0) = cox(0) = 1$, তাহলে $P(0)$ এর মানও $1$ হতে হবে। 
$P(0) = C_0 + C_1 \times 0 + C_2 \times 0^2  = 1$
$\implies C_0 = 1$

তাহলে $P(x) = 1 + C_1 x + C_2 x^2$। এখন আমরা বাকি দুটো সহগের মান বের করবো। আমরা এটা বুঝেছি $P(x)$, Y-অক্ষকে ছেদ করবে $1$ বিন্দুতে। শুধু এইটুকু দিয়ে আসলে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না, কারণ অনেকগুলো গ্রাফই Y-অক্ষকে $1$ বিন্দুতে ছেদ করতে পারে। 


এখন তাহলে আমরা দেখি $x=0$ বিন্দুতে $f(x)$ এর ঢাল কতো, সেটাই আসলে $P(x)$ এরও ঢাল হতে হবে। 
$f'(x) = -sinx, f'(0) = -sin(0) = 0$
তার মানে $P'(0)$ এর মানও হতে হবে $0$।
$P'(x) = C_1 + 2C_2 x = 0, P'(0) = C_1 \implies C_1 = 0$

তাহলে এবার $P(x) = 1 + C_2 x^2$। এখন বোঝা গেল  $P(x)$ Y-অক্ষকে ছেদ করবে $(0,1)$, এবং ওই বিন্দুতে ঢালের মান হবে $0$। কিন্তু শুধু এটুকু থেকেও গ্রাফটা সম্পর্কে একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া বেশ কঠিন। 


এখন আরও ভালভাবে বোঝার জন্য আমাদের আরেকবার ডিফারেনশিয়েট করতে হবে। এখন আমরা সমান করবো সেকেন্ড ডেরিভেটিভ।
$f''(x) = -cosx, f''(0) = -1$
তার মানে $P''(0) = -1$
এখন, $P''(x) = 2C_2, P''(0) = 2C_2 = -1 \implies C_2 = -\frac{1}{2}$

তাহলে যেটা পাওয়া গেল, সেটা হলো, $P(x) = 1 - \frac{x^2}{2}$।

আমরা ত্রিকোণোমিতি দিয়েও এরককম একটা জিনিস পেয়েছিলাম, তাহলে এত কষ্ট করে একই জিনিস করার দরকার কী?

এখানে আসলে বুঝতে হবে ত্রিকোণোমিতির ফর্মূলাটা শুধু $cosx$ এর জন্যই প্রযোজ্য। অন্য কোন ফাংশনকে এভাবে বহুপদী বানানো যাবে না। আবার ত্রিকোণমিতি দিয়ে রেঞ্জটা ছিল কম, আমরা চাইলেও এই বহুপদীকে আর বেশিদূর নিয়ে যেতে পারি না।

অন্যদিকে, এভাবে বারবার অন্তরজ বের করলে আমরা আরও অনেকদূর এই বহুপদী বিস্তৃতি করা যাবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, শুরুতে $P(x)$ আর $f(x)$ এর তেমন কোন মিল ছিল না, আমরা আস্তে আস্তে যত বেশিবার ডিফারেনশিয়েট করেছি, ততোবেশি $P(x)$ কে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। সেকেন্ড ডেরিভেটিভ এর পর আমরা যদি এই বহুপদীকে এভাবে আরও বেশি পদ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম, তাহলে আরও বেশি ভালভাবে $P(x)$ আর $f(x)$ এর মধ্যে মিল থাকতো। 


তার মানে অন্তত এটা বোঝা যাচ্ছে, আমরা যত বেশি বার ডিফারেনশিয়েট করছি, বহুপদীতে তত পদের সংখ্যা বাড়ছে, $P(x)$ তত $f(x)$ এর সমান হচ্ছে। শুরুতে শুধু $0$ এর কাছাকাছি মানগুলোর জন্যই এই মানগুলো সমান ছিল। ধীরে ধীরে এই অঞ্চলটাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।


এভাবে বেশ কিছু পদ পর্যন্ত ডিফারেনশিয়েট করে একটা বহুপদী বানানো হলে তাকে বলা হচ্ছে টেইলর বহুপদী। 

$cosx$ এর টেইলর সিরিজ

আমরা $cosx$ এর মোটামুটি তিন বার ডিফারেনশিয়েট করে একটা বহুপদী পেয়েছি এবং বলছি এই কাজটা বেশিবার করলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে। কিন্তু বেশিবার করতে গেলে প্রতিবারই এত বড় হিসাব না করে আমরা একটা সাধারণ পদ বের করার চেষ্টা করি। 

মনে করি, $f(x)$ একটা ফাংশন, সেটা অসীমবার ডিফারেনশিয়েট করা যায়। এর ফার্স্ট ডেরিভেটিভ, সেকেন্ড ডেরিভেটিভ, থার্ড ডেরিভেটিভ,...... $nth$ ডেরিভেটিভ যথাক্রমে $f(x), f'(x), f''(x), f^3(x), ...... f^n(x)$।

আবার তাহলে আমরা ধরে নিই, $P(x) = C_0 + C_1 x + C_2 x^2 + C_3 x^3 + ...... C_n x^n$

শুরুতে ধরে নেব, $f(0) = P(0), P(0) = C_0 \implies C_0 = f(0)$
এরপর ধরে নেব $f'(0) = P'(0), P'(x) = C_1 + 2.1 C_2x + 3C_3x^2 + ....., P'(0) = C_1 \implies C_1 = f'(0)$
এবার, $f''(0) = P''(0), P''(x) = 2.1 C_2 + 3.2C_3x + ......, P''(0) = 2.1 C_2 \implies C_2 = \frac{f''(0)}{2!}$
আরেকবার এই কাজটা করা যাক।
$f^3(0) = P^3(0), P^3(x) = 3.2.1 C_3 + ......, P^3(0) = 3! C_3 \implies C_3 = \frac{f^3(0)}{3!}$

এখন তাহলে মোটামুটি বোঝা যাচ্ছে সাধারণ পদটা কীরকম হবে।
$x^n$ এর সহগ হবে $C_n = \frac{f^n(0)}{n!}$, তাহলে সাধারণ পদ হলো $\frac{f^n(0)}{n!} x^n$

তাহলে বিষয়টা দাঁড়ালো এরকম,
$f(x) = f(0) + f'(0) x + \frac{f''(0)}{2!} x^2 + \frac{f^3(0)}{3!} x^3 + ....... + \frac{f^n(0)}{n!} x^n + ...... \infty ----(4)$

এভাবে আমরা যদি অসীম পর্যন্ত বিস্তৃতি করতেই থাকি, সেটা হবে টেইলর সিরিজ, আর যদি কিছুদূর করার পর থেমে যাই, তাহলে সেটা হবে টেইলর বহুপদী। সব টেইলর সিরিজ যে সব বিন্দুতে মূল ফাংশনের সমান হবে, এমন নয়। এখানে কনভার্জেন্স-ডাইভার্জেন্সের কিছু ব্যাপার আছে। আমরা এই বিষয়টা সামনে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

তাহলে আমাদের $cosx$ এর টেইলর সিরিজ বের করা যাক।
$f(x) = cosx, f(0) = 1$
$f'(x) = -sinx, f'(0) = 0$
$f''(x) = -cosx, f''(0) = -1$
$f^3(x) = sinx, f^3(0) = 0$
$f^4(x) = cosx, f^4(0) = 1$
$f^5(x) = -sinx, f^5(0) = 0$
$f^6(x) = -cosx, f^6(x) = -1$

$f(x) = f(0) + f'(0) x + \frac{f''(0)}{2!} x^2 + \frac{f^3(0)}{3!} x^3 + ....... + \frac{f^n(0)}{n!} x^n + ...... \infty$ এখানে মানগুলো বসিয়ে দিই।
$cosx = 1 - \frac{x^2}{2!} + \frac{x^4}{4!} - \frac{x^6}{6!} + ....... \infty$

$e^x$ এর বিস্তৃতি

এখন যেহেতু আমরা একটা ফাংশনকে বহুপদীতে রূপান্তর করার মূল বিষয়টা বুঝে ফেলেছি, এখন আমাদের উচিত এই বিষয়টা ভালোভাবে বোঝার জন্য একটা উদাহরণ করা। আমরা এখন $e^x$ এই টেইলর সিরিজের বিস্তৃতি করি।

$f(x) = f(0) + f'(0) x + \frac{f''(0)}{2!} x^2 + \frac{f^3(0)}{3!} x^3 + ....... + \frac{f^n(0)}{n!} x^n + ...... \infty$

$f(x) = e^x, f(0) = 1$
$f'(x) = e^x, f'(0) = 1$
$f''(x) = e^x, f''(0) = 1$
$f^3(x) = se^x, f^3(0) = 1$
$f^4(x) = e^x, f^4(0) = 1$
$f^5(x) = -e^x, f^5(0) = 1$
$f^6(x) = e^x, f^6(x) = 1$

মান বসিয়ে দিইঃ
$e^x = 1 + x + \frac{x^2}{2!} + \frac{x^3}{3!} + \frac{x^4}{4!} + ............ \frac{x^n}{n!} + .......\infty$


টেইলর সিরিজ এবং ম্যাকলরিন সিরিজ

আমরা এতক্ষণ ইচ্ছা করেই হিসাব সুবিধাজনক রাখার জন্য অ্যাপ্রোক্সিমেশনের কাজটা শুরু করেছিলাম $0$ বিন্দু থেকে। কিন্তু অনেক সময় এমন হতে পারে, অন্য একটা বিন্দুর কাছাকাছি মানগুলো আমাদের লাগবে, তখনও যদি $0$ থেকেই শুরু করি, তাহলে দেখা যাবে অনেক দূর পর্যন্ত এই ধারা নিয়ে যেতে হবে। তার চেয়ে সুবিধাজনক একটা পদ্ধতি হলো, অন্য একটা বিন্দু থেকেই এই অ্যাপ্রোক্সিমেশন শুরু করা।

আমরা দেখেছি, $0$ থেকে শুরু করলে টেইলর সিরিজ হয় এরকম - 
$f(x) = f(0) + f'(0) x + \frac{f''(0)}{2!} x^2 + \frac{f^3(0)}{3!} x^3 + ....... + \frac{f^n(0)}{n!} x^n + ...... \infty$

একইভাবে অন্য কোন বিন্দু $a$ এর সাপেক্ষে এই অ্যাপ্রোক্সিমেশন শুরু করলে সেটাকে আমরা এভাবে বিস্তৃতি করবো - 
$f(x) = f(a) + f'(a) (x-a) + \frac{f''(a)}{2!} (x-a)^2 + \frac{f^3(a)}{3!} (x-a)^3 + ....... + \frac{f^n(a)}{n!} (x-a)^n + ...... \infty---(5)$

টেইলর সিরিজের জন্য আমরা আসলে যেকোন বিন্দুর সাপেক্ষেই এই কাজ শুরু করতে পারি। তার একটা স্পেশাল অংশ হচ্ছে $0$ থেকে শুরু করা। এই স্পেশাল অংশের নাম হলো ম্যাকলরিনের সিরিজ। অর্থাৎ ম্যাকলরিন সিরিজ, টেইলর সিরিজেরই একটা অংশ। আমরা এতক্ষণ আসলে যা কিছু করলাম, সবই ছিল $0$ থেকে, তাই এদের ম্যাকলরিনের ধারাও বলা যেতে পারে। 

এখন তাহলে আমরা অন্য একটা বিন্দুর সাপেক্ষে একটা ফাংশনকে বিস্তার করি। 
$f(x) = ln(x)$ হলে এখন আর $0$ থেকে শুরু করার উপায় নেই, কারণ  $0$ বিন্দুতে এর মান সংজ্ঞায়িত নয়! আমরা এই কাজটা করব $1$ থেকে।

$f(x) = lnx, f(1) = 0$
$f'(x) = \frac{1}{x}, f'(1) = 1$
$f"(x) = -\frac{1}{x^2}, f"(1) = -1$
$f^3(x) = 2 \frac{1}{x^3}, f^3(1) = 2$
$f^4(x) = -3.2 \frac{1}{x^4}, f^4(1) = -3!$
$f^5(x) = 4.3.2 \frac{1}{x^5}, f^5(1) = 4!$

(5) এ মান বসিয়ে দিলে পাই,
$lnx = (x-1) - \frac{(x-1)^2}{2} + \frac{(x-1)^3}{3} - \frac{(x-1)^4}{4} + \frac{(x-1)^5}{5} - ......... + (-1)^{n-1} \frac{(x-1)^n}{n} + ...... \infty$

কনভার্জেন্স-ডাইভার্জেন্স

এখন এই $lnx$ এর ফাংশন থেকে একটা নতুন জিনিস দেখা যাক। আমরা $cosx$ এর ফাংশনকে টেইলর সিরিজ দিয়ে লিখেছিলাম, তখন আসলে দেখা যাচ্ছিল, আমরা যত বেশি পদ নিচ্ছি, ততো বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে মূল ফাংশনের কাছাকাছি যাচ্ছিল। কিন্তু এই ফাংশনটা আমরা যতই পদের সংখ্যা বাড়াই না কেন, দেখা যাবে একটা নির্দিষ্ট রেঞ্জের পর আর সমান করা যাচ্ছে না। 

একটা পদ বেশি নিলে দেখা যাবে, ওই অঞ্চলের বাইরে ফাংশনটা হুট করে লাফিয়ে উপরে উঠে গেছে। যখন সমান করার জন্য আরেকটা পদ নেয়া হবে, তখন দেখা যাবে, ফাংশনটা লাফিয়ে নিচে নেমে এসেছে। আরেকটা পদ বাড়ালে আবার লাফিয়ে উপরে উঠে যাবে। আমরা যতই পদসংখ্যা বাড়াতে থাকি, যত বেশিবার ডিফারেনশিয়েট করি, দেখা যাবে এই লাফালাফি চলতেই থাকবে। 

অর্থাৎ এই ফাংশনটা কনভার্জিং না। তবে যে বিন্দুর সাপেক্ষে কাজটা করা হচ্ছে, তার আশেপাশের এলাকা জুড়ে এটা বেশ ভালোভাবেই মান দেয়। 

তার মানে সব টেইলর সিরিজই যে অসীম পদ পর্যন্ত গেলে মূল ফাংশনের দিকে কনভার্জ করবে, এমন না। যে অঞ্চল জুড়ে এই মানটা কাছাকাছি হবে, তাকে বলে হয় "Rasius of Convergence"।

জ্যামিতিক অ্যাপ্রোক্সিমেশন

জ্যামিতি জিনিসটা বরাবরই আমার একটু ভাল লাগে। বীজগণিতের বহু আগে জ্যামিতির উদ্ভব হয়। যা কিছু বীজগণিতে এসে, তার প্রায় সবই জ্যামিতি করে আনা যাবে। জ্যামিতির সুবিধা হলো, পুরো জিনিসটাকে চোখের সামনে দেখা যায়, বীজগণিতে যেটা অনেক ক্ষেত্রেই সম্বভব হয় না। তবে জ্যামিতিতে হিসেবগুলো মাঝে মাঝেই ভয়ংকর রকমের জটিল হয়ে যায়!

যা হোক, আমরা একটু চেষ্টা করে দেখি জ্যামিতি দিয়ে টেইলর সিরিজে আসতে পারি কিনা।

ক্যালকুলাসে ফান্ডামেন্টাল থিওরেম বলে একটা কথা আছে। কোন একটা ফাংশন নিজেই তার ক্ষেত্রফল ফাংশনের ঢাল। একটু সহজ করে বললে ডিফারেনসিয়েশনের উল্টো হলো ইন্টিগ্রেশন। মানে, একটা ফাংশনকে একবার ইন্টিগ্রেট করে আবার ডিফারেনশিয়েট করলে সেই ফাংশনটাই ফেরত আসে। আর একটা ফাংশনের ইন্টিগ্রেশন মানেই তো তার ক্ষেত্রফল ফাংশন। 

এখন মনে করি একটা ফাংশন f, আর তার ক্ষেত্রফল ফাংশন F। মানে সোজা কথায় $\int fdx = F \implies F' = f$।

উপরের ছবি দুটো ভালোভাবে দেখলেই আসলে বোঝা যাচ্ছে, ক্ষেত্রফল ফাংশনের টেইলর বহুপদীর প্রথম তিন পদ। 
$F(x) = F(a) + F'(a)(x-a) + F''(0)(x-a)^2$

এখন অনেকের মনে হতে পারে, তাহলে জ্যামিতিক উপায়ে মাত্র তিন পদ পাওয়া যাচ্ছে, আর ক্যালকুলাস দিয়ে তো আমরা অনেকগুলো পদ পর্যন্ত বের করতে পারবো। তাহলের জ্যামিতিতে বাকি ক্ষেত্রফল কোথায় গেল? আমরা যেখন শেষ ক্ষেত্রটাকে ত্রিভুজ ধরেছিলাম, সেটা কিন্তু পুরোপুরি ত্রিভুজ ছিল না, ওটার কোণাগুলো হিসেব করলে আসলে বাকি পদগুলোও আনা সম্ভব।

আজকের আলোচনা এপর্যন্তই থাক। সামনের পর্বে আমরা ল্যাগ্রাঞ্জের রিমাইন্ডার থিওরেম কীভাবে আসলো সেটা বোঝার চেষ্টা করবো।

React

Share with your friends!

Comments

  1. ভাই,লেখাটা দুটোর PDF দেয়া যাবে। প্লীজ,কৃতজ্ঞ থাকবো।

    ReplyDelete
  2. আমার পড়া শ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যা।টেইলরের সিরিজের উপর।

    ReplyDelete
    Replies
    1. আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আসলে এগুলোর কোন পিডিএফ নেই, তবে আমি চেষ্টা করবো একটা পিডিএফ করে আপনাকে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য।

      আমি জানি না, আপনি এই লেখার লিংক কোথায় পেলেন, কারণ আমি মাত্র লিখে এখানে রাফের মত করে রেখেছি, আর ব্লগটাও সেভাবে গোছানো হয় নি কখনো! আপনি দুয়েকজন বন্ধুর বাইরে আপনিই সম্ভবত প্রথম, যে এই লেখাটা পড়লেন। আপনাকে ধন্যবাদ।

      Delete

Post a Comment